ইদানিং যুব সমাজে একটি কালচার গড়ে উঠেছে, সেটি হলো রাত জাগা। রাত যত গভীর হয় তাদের মধ্যে স্মার্ট ফোনে আদান-প্রদান ততো বেড়ে যায়। ফোন বা ল্যাপটপে ফেসবুক চ্যাটিংয়ে রাত শেষ করে। এর জন্য মোবাইল ফোনের কোম্পানিগুলো বিশেষ অফার দিয়ে থাকে। নিশ্চিত জেনে রাখুন, প্রতিরাতে আপনি নীরবে ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছেন স্বাস্থ্য দুর্ভোগের ঝুঁকি।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হঠাৎ দু-একদিন জরুরি প্রয়োজনে রাত জাগতে হতেই পারে। কিন্তু ক্রমাগত রাত জাগার ফলে একজন মানুষের দেহে দেখা দিতে পারে মারাত্মক রোগব্যাধি। এর পরিণতিতে রাত জাগা ব্যক্তি আক্রান্ত হন স্লিপ ডিজঅর্ডার, অপরিণত বয়সে হৃদরোগ, বিষন্নতা এমনকি পারিবারিক অশান্তিতে।
গবেষণায় দেখা গেছে, স্মৃতিশক্তি, সৃজনশীলতা, প্রাণবন্ততা, কর্মতৎপরতা কমে যায় এবং বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডকে শ্লথ করে টানা রাত জাগরণ। অন্যদিকে স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন পরিমিত ঘুম ও বিশ্রাম হলে স্মৃতিশক্তি হয়ে ওঠে সংহত এবং তা প্রয়োজনের সময় কাজও করে ভালোভাবে।
More Read: যে কারনে আপনার নিয়মিত মধু খাওয়া উচিত
প্রকৃতগত নিয়ম হচ্ছে দিনে কাজ করা, আর
রাতে ঘুম। সব ক্লান্তি দূর করে আবার কাজ করার শক্তিও যোগায় ঘুম। কিন্তু
আপনি যখন ক্রমাগত রাত জাগবেন তখন জ্বর জ্বর ভাব, ঠান্ডা লাগা, এসিডিটির
পাশাপাশি দুর্বল হতে থাকবে আপনার শরীর।
মানবদেহের বিভিন্ন হরমোন ও
এনজাইম রাত-দিন ভেদে কার্যক্রম চালিয়ে থাকে। কর্টিসোল স্বাস্থ্যগত
কার্যক্রমে অত্যন্ত প্রভাব বিস্তারকারী। এ হরমোনটির নিঃসরণ-মাত্রা দিনের
প্রথমার্ধে থাকে সর্বোচ্চ পরিমাণে এবং এরপর থেকে কমতে থাকে। কিন্তু টানা
রাত জাগরণের ফলে এই প্রাকৃতিক নিয়ম পাল্টে যায়।
কেউ হয়তো বলবেন ক্রমাগত রাত জেগে তার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে গবেষকদের ভাষ্য হলো, বর্তমানে হয়তো ক্ষতি প্রত্যক্ষ হচ্ছে না কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার ঠিকই হয়। এক সময় এর প্রভাব দেখা দিবে।রাতের ঘুম পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। সূর্যের গতিবিধি পরিপাকতন্ত্রের কর্মপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। মানব পরিপাকতন্ত্র সবচেয়ে ভালো কাজ করে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মধ্যবর্তী সময়ে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ কমতে থাকে খাবার হজমে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন এনজাইম নিঃসরণের পরিমাণ।
যারা রাত জাগেন তারা রাতের খাবার খান দেরি করে। তাদের খাবার ভালো হজম হয় না। এজন্যে প্রায়শই হজমযন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়। অন্যদিকে রাতে শীঘ্র খাবার গ্রহণ ও পরিমিত ঘুম পরিপাকতন্ত্রকে রাখে সুস্থ এবং ওজনও রাখে নিয়ন্ত্রণে। স্বাস্থ্য গবেষকরা বলছেন, ছন্দময় সুস্বাস্থ্য এবং গতিময় কর্মব্যস্ত জীবনের জন্যে প্রতিরাতে পরিমিত ঘুমান। তাতে আপনি সারাদিনই থাকবেন কর্মতৎপর, চটপটে, সৃজনশীল ও তীক্ষ স্মৃতিশক্তির অধিকারী।
নতুন এক গবেষণায় জানা যায়, রাতজাগা মানুষের ডায়াবেটিস, মানসিক সমস্যা এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি।স্বাস্থ্য কিন্তু সব সুখের মূল। তাই আসুন, এখনই রাত জাগা অভ্যাস ত্যাগ করে সুস্বাস্থ্যের দিকে মনযোগ হই। নিজের জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবনকে সুখের দিকে ধাবিত করি।
Source Of: একুশে টিভি
No comments:
Post a Comment
Thank you for your message, I see all your messages, it is not possible to reply many times due to busyness, I hope I will reply to everyone in time, thank you for being with me. Thanks you watching my content. Please like, Follow, Subscribe.