b Sanatan Dharma - সনাতন ধর্ম: অনুভূতি রথযাত্রা মহা-মহোৎসব ২০২১

https://a-ads.com/

ব্রেকিং নিউজ

সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন । আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দিন। বিজ্ঞপ্তি: জরুরী সংবাদকর্মী নিয়োগ চলিতেছে…। আপনি কি কম খরচে Website, Bloggersite, Youtube channel, E-commica site তৈরি করতে চান? যোগাযোগ করুন বিস্তারিত : মোবাইল: 01712475454,01940103713 , দেশ - বিদেশের খবর সবার আগে জানতে সাথে থাকুন।আমাদের সংঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ এ রকম আরও ভিডিও/ সর্বশেষ সংবাদ Update News পেতে আমাদের Website /Youtube Channel পেইজে লাইক দিন৷ ❤️ ✌ ✔️ কোন মতামত বা প্রশ্ন থাকলে কমোন্ট করে জানান।

Monday, July 12, 2021

অনুভূতি রথযাত্রা মহা-মহোৎসব ২০২১

 

রথযাত্রা মহা-মহোৎসব
সনাতন ধর্মের অনুসারী হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিভিন্ন উৎসবের মধ্যে অন্যতম একটি প্রধান উৎসব রথযাত্রা। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এ উৎসবটি শুরু হয়। এক সপ্তাহ পর ফিরতি রথযাত্রার মধ্য দিয়ে উৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটে। রথযাত্রা মহা ধুমধামের এ উৎসব সামাজিক অনন্য বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। এর একটা প্রাকৃতিক রূপরেখা রয়েছে। জ্যোতির্বিদ্যায় দেখা যায়, মহাকাশে বিষুবরেখা থেকে সূর্য একবার উত্তরে এবং একবার দক্ষিণে বার্ষিক পরিক্রমণ করে। সূর্য সপ্তঅশ্ব চালিত রথে উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ন পরিক্রমণ করে। মূলত সূর্যের বিষুব রেখার উত্তর ও দক্ষিণের পরিক্রমণের সঙ্গে রথযাত্রা এবং ফিরতি রথযাত্রার মিল রয়েছে। 

রথযাত্রা মহা-মহোৎসব

হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে সূর্যও দেবতা। কার্যত প্রকৃতি উৎসারিত সবকিছুই পরম সৃষ্টিকর্তার লীলাবিধৌত। ধর্মীয় বিশ্বাসের এক অনুপম সৌন্দর্যবোধ থেকেই বিভিন্ন উৎসবের উৎপত্তি। রথযাত্রা তেমনি একটি সামাজিক সৌষ্ঠবমণ্ডিত উৎসব। পুরাণে এর নানা রকম বিশ্নেষণ রয়েছে। পৌরাণিক কাহিনির আলোকে রথযাত্রার ব্যাপক বিশ্নেষণ অপরিহার্য। বর্তমানে রথযাত্রা উৎসবটি পুরোনো প্রচলিত সর্বজনীন মঙ্গলময় উৎসবে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এ উৎসব উদযাপন করে থাকে। তবে ভারতের ওডিশা প্রদেশের পুরীর রথযাত্রা মূল কেন্দ্র। 

সমুদ্রতীরের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ বেষ্টিত পুরীর জগন্নাথ মন্দির। পুরীর জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসবের কথা বিশ্ববাসীর কাছে অজানা নয়। মতভেদে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে থেকেই ধর্মীয় উৎসব হিসেবে রথযাত্রা উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে। স্কন্দ পুরাণ মতে বিশ্বকর্মা নিমগাছের টুকরো দিয়ে জগন্নাথ দেবের মূর্তি তৈরি করেন। বিষ্ণুর প্রতিবিম্ব হিসেবে স্বয়ং ব্রহ্মা এর পূজা করেন। সমুদ্রতীরে দৈবযোগে প্রাপ্ত নিমগাছের টুকরো থেকে জগন্নাথ মূর্তি নির্মিত হয়, তাই জগন্নাথকে দারুব্রহ্ম নামেও অভিহিত করা হয়। জগন্নাথের মূর্তির আকার সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়। ওড়িয়া সাহিত্যের ইতিহাসে দেখা যায় উৎকলে (উড়িষ্যা) এক সময় বৌদ্ধ ধর্মের প্রাধান্য ছিল। ওড়িয়া সাহিত্যবিশারদগণ রথ উৎসব নিয়ে নানা রকম সাহিত্য রচনা করেন। 

রথযাত্রা মহা-মহোৎসব

সেই সাহিত্যের আলোকে বৈষ্ণব ধর্মের প্রখ্যাত পণ্ডিত ও দার্শনিক রামানুজের মতবাদের বিকাশ লক্ষ্য করা যায়। রামানুজের মতানুসারে জগন্নাথের বিগ্রহ বুদ্ধ রামচন্দ্র ও শ্রীকৃষ্ণের সমন্বিত মূর্তি। রথ উৎসব চলমান মন্দিরে বিগ্রহের পূজানুষ্ঠান। সাধারণত স্থিতিশীল মন্দিরে পূজানুষ্ঠান হয়ে থাকে। মন্দির অভ্যন্তরে পূজানুষ্ঠানে ব্যাপকভাবে সাধারণের অংশগ্রহণ সম্ভব নয়। কিন্তু রথযাত্রা উৎসবে ধর্ম, বর্ণ, ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। এর সর্বজনীন আধ্যাত্মিক একটা ভাবও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

রথোপরি এক পাশে প্রভু জগন্নাথ, মাঝখানে সুভদ্রা এবং বাঁয়ে বলভদ্র রথে আসীন থাকেন। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে জগন্নাথ, সুভদ্রা, বলভদ্র সম্পর্কে ভাই-বোন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণই জগন্নাথ হিসেবে রথে আরোহণ করেন। রথ হচ্ছে চাকাবিশিষ্ট স্থাপত্য। ধর্মীয় বিশ্বাসে অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী পুণ্য সঞ্চয়ের লক্ষ্যে রথ সড়কপথে টেনে নিয়ে যায়। রথের মাঝে শিল্পিত মোটা রশি বাঁধা থাকে। সেই রশি ধরে ভক্তরা টানতে থাকে এবং রথে আসীন দেবমূর্তি দর্শন করে গভীর ভক্তি সহকারে। এই রথোৎসব ধর্মীয় সংস্কৃতিকেও বিকশিত করেছে। আর প্রকটতম আধ্যাত্মিক বিষয়টি হচ্ছে- রথ আমাদের শরীর বা দেহযন্ত্র। রথ এই দেহেরই প্রতীক। আত্মা হলো রথী বা রথের মধ্যে অবস্থানকারী। বুদ্ধি হলো সারথি বা চালক। মন হচ্ছে লাগাম। মানব দেহের ইন্দ্রিয়গুলো হচ্ছে ঘোড়া। 

রথযাত্রা মহা-মহোৎসব

ঘোড়ায় যেমন গাড়ি বা রথ টানে, তেমনি আমাদের দেহকেও টেনে নিয়ে যায় ইন্দ্রিয়শক্তি। পার্থিব এ জগতে যত রকম ভোগের বিষয় রয়েছে, সেগুলো দেহধারী রথের গমনপথ। ঘোড়া যদি ভালো এবং সুনিয়ন্ত্রিত হয়, তবে সারথি রথটিকে সঠিকভাবে লক্ষ্যপথে পৌঁছে দিতে পারবে। আর যদি দুষ্ট হয়, তাহলে রথকে কোথায় টেনে নিয়ে যাবে তা বলা দুস্কর। তেমনি ইন্দ্রিয় যদি সংযত হয়, সুনিয়ন্ত্রিত হয়, তাহলে মানব তার কল্যাণপথের সন্ধান পেয়ে সার্থক জীবনের স্বাদ অনুভব করবে। তাই রথ হচ্ছে একটি অনুভূতির নাম। এই কভিড সংক্রমণকালে রথযাত্রা উৎসবটির ব্যাপকতা না থাকলেও অনুভূতি সর্বদা দেদীপ্যমান। দেহ রথের ইন্দ্রিয় সংযত হোক এটাই কামনা। সনাতন ধর্মের প্রাণপুরুষ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের লীলা বিলাসের অনবদ্য একটি অনুষঙ্গ রথযাত্রা উৎসব। 

বহু মানবের মিলন ক্ষেত্র রথ উৎসব ভগবত প্রেমের পীঠস্থান। প্রভু শ্রী চৈতন্যদেব তার অনুগত ভক্তবৃন্দকে অবাধ মানবীয় ভালোবাসার সুযোগ সৃষ্টি করে রথযাত্রা উৎসবকে মহিমান্বিত করেছেন। উপমহাদেশে রথযাত্রা উৎসব সামাজিকভাবে ব্যাপক মর্যাদা লাভ করেছে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় রথ উৎসবের ঐতিহ্য অনেকটাই বর্ণ হারিয়ে ফেলেছে। দিন দিন অনুভূতির জায়গায় খোঁচা লাগতে শুরু করেছে। যা একটি অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে কোনো ক্রমেই কাম্য হতে পারে না। ভারতে পুরীর জগন্নাথ দেবের রথ উৎসবের আমেজে ভরপুর ছিল বাংলাদেশের ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলায়। তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের ধামরাই মফস্বল শহরের প্রধান সড়কে রথের মহোৎসব অনুষ্ঠিত হতো জাঁকজমকভাবে। প্রায় পাঁচশ বছরের ঐতিহ্য ধারণ করা ধামরাইয়ের রথটির কথা সবাই জানত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি জান্তার নেতৃত্বে এদেশীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় শৈল্পিক স্থাপত্য বিশাল আকারের রথটি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। 

রথযাত্রা মহা-মহোৎসব

প্রায় এক মাসব্যাপী রথটি দগ্ধ হচ্ছিল, তখন হিন্দু সম্প্রদায়ের হৃদয় মন্দিরটিই যেন জ্বলছিল। ধামরাইয়ের প্রধান সড়কটি কয়লার পাহাড়ের রূপ ধারণ করছিল। যাহোক দেশ স্বাধীন হলো, স্বাধীনতার এত বছর পরও অনুরূপ একটি রথ নির্মাণ সম্ভব হয়নি। বরঞ্চ রথোৎসবের নির্ধারিত জায়গাও সংকুচিত হয়ে আসছে দিন দিন। ভূমিদস্যুদের কবলে পড়ে রাধামাধবের মন্দিরের জায়গাও বেদখল হয়ে গেছে। রথ উৎসবে নেই আগের জৌলুস। হিন্দু সম্প্রদায়ের আবেগের গুরুত্ব দিন দিন ম্লান হলেও এর আমেজ এতটুকু কমেনি। হিন্দু ভক্তদের মনের গভীরে রথ উৎসবের রসধারা প্রবাহিত হয় আপন গতিতে। কেননা রথে আসীন জগন্নাথ দেবের দারুবিগ্রহ চলমান রথে জীবন্ত বিগ্রহেরই প্রতীক হিসেবে বহমান। এভাবে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বার্তা সব ভক্তের সামনে উপস্থিত হয়। ভক্তরা ভাবগাম্ভীর্যে প্রার্থনা জানাতে সমবেত হয় উৎসবে। অসংখ্য মানুষের মনুষ্যত্ববোধ জেগে ওঠে উৎসব প্রাঙ্গণে। বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও নানা মত ও পথের মানুষ উপভোগ করে রথযাত্রা অনুষ্ঠান। 

ঈশ্বর বস্তুকে উপলব্ধির অনন্য এক প্রয়াস লাভ করে রথযাত্রা উৎসবে। হিন্দু ধর্মে সৃষ্টিতত্ত্ব এক বিবর্তনবাদের ওপরে প্রতিষ্ঠিত। ব্রহ্মের বিবর্তে ঈশ্বর প্রতিভাত। সুতরাং যুগে যুগে নানা অবতার দৃশ্যত হলেও ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়। ঈশ্বরের বিভিন্ন রূপ কল্পনায় ভক্তরা ভক্তি আরোপ করে এবং অর্ঘ্য নিবেদন করে। জগন্নাথ দেবের মূর্তিও অনুরূপ ব্রহ্মেরই অবয়ব, সেই সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের প্রতিকৃতি। আমাদের দেহ রথের সারথির সঙ্গে সাধনার মাধ্যমে যে শক্তি যোগ সমাবেশ ঘটে সেই শক্তির স্রোতধারায় রথযাত্রার উৎসব লীন হয়ে যায় অনুভূতির মোহনায়। হিন্দু ধর্ম নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি রয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে এই বিভ্রান্তির মূল কারণ হচ্ছে মূলতত্ত্বে প্রবেশ করতে না পারা। 

রথযাত্রা মহা-মহোৎসব

মূল তত্ত্বে প্রবেশে ব্যর্থতার জন্যই এই বিভ্রান্তি একটি বৃহৎ বৃক্ষের যেমন শাখা-প্রশাখা অনেক, এই শাখা-প্রশাখার সঙ্গে মূল বৃক্ষের সম্পর্ক ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। মূল থেকে শাখা-প্রশাখা পরিপুষ্টি লাভ করে। এর কোনো অঙ্গকেই বিচ্ছিন্ন দেখা যায় না। শাখা-প্রশাখা পরস্পর পরিপূরক। তবে মূলই হচ্ছে শাখা-প্রশাখার নিয়ামক শক্তি বা সত্তা। হিন্দু ধর্মে শাখাস্বরূপ অনেক সম্প্রদায় রয়েছে, যথা- বৈষ্ণব, শৈব, শাক্ত, সৌর এবং গানপত্য প্রভৃতি। আবার ধর্মের মূল তত্ত্বকে বোঝার জন্য সাকার, নিরাকার, সগুণ-নির্গুণ, দ্বৈত-অদ্বৈত কতভাব কত মতবাদ। প্রকৃতপক্ষে লক্ষ্যে পৌঁছতে এসব পথ পরিক্রমা। 

এ যেন স্বর্ণের অলংকার। নামরূপ ভেদে একেক ধরনের অলংকার, আসলে একই সেনার তৈরি এসব অলংকার। এই বিভিন্নতা সত্ত্বেও মূল ভাব ধারণ করতে জ্ঞান, ভক্তি এবং শুদ্ধ কর্মের প্রয়োজন। জগন্নাথ দেবের রথ উৎসব উদযাপনও শুদ্ধ কর্মের অনন্য এক মহান কর্ম। তাই রথ উৎসবকে কেন্দ্র করে ভক্তিভাবে ভক্তরা লুটিয়ে পড়ে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ তার কবিতায় একটি পঙ্‌ক্তিতে লিখেছেন, 'রথযাত্রা লোকারণ্য মহা ধুম ধাম/ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম।'

No comments:

Post a Comment

Thank you for your message, I see all your messages, it is not possible to reply many times due to busyness, I hope I will reply to everyone in time, thank you for being with me. Thanks you watching my content. Please like, Follow, Subscribe.

বাণী চিরন্তণী Motivational quotes

Popular Posts

Hindu international Consciousness

ad

Featured Post

পবিত্র বেদ পাঠ,পবিত্র বেদ পাঠ বিভাগ – ॐ সনাতন ধর্মতত্ত্ব পবিত্র বেদের উৎপত্তি ও ইতিহাস

বেদ মাতার ইচ্ছায় বাংলা ভাষায় ঋগ্বেদের মূলমন্ত্র অর্থ ও টীকাসহ প্রকাশের চেষ্টা করা হয়েছে। ধীরে ধীরে এর কলেবর বৃদ্ধি করার চেষ্টা চলতে থাক...